ভলোদিমির জেলেনস্কির সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক সফর এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বিতর্ক বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এই প্রবন্ধে আমরা সেই বিতর্ক, জেলেনস্কির ব্রিটেন সফর, এবং এর প্রেক্ষাপটে ইউক্রেনের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশদভাবে আলোচনা করব।
ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতর্ক: পটভূমি ও প্রতিক্রিয়া
২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে 'স্বৈরশাসক' বলে উল্লেখ করেন। ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পটভূমিতে রয়েছে ইউক্রেনে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন না হওয়া এবং চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি। ট্রাম্প বলেন, "নির্বাচন ছাড়া একজন স্বৈরশাসক জেলেনস্কির দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, না হলে তার আর কোনো দেশ থাকবে না।
জেলেনস্কি এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ট্রাম্প রাশিয়ার বিভ্রান্তিমূলক তথ্যের ফাঁদে পড়েছেন এবং ইউক্রেন সম্পর্কে আরও বাস্তব তথ্য জানা উচিত। তিনি উল্লেখ করেন যে, ট্রাম্পের দেওয়া তথ্য বিভ্রান্তিকর এবং তাঁর জনপ্রিয়তা ৪ শতাংশ বলে যে তথ্য দেওয়া হচ্ছে, সেটিও রুশ অপপ্রচার।
ব্রিটেন সফর: স্টার্মারের সঙ্গে সাক্ষাৎ
ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কের পরপরই জেলেনস্কি ব্রিটেন সফরে যান। লন্ডনের ১০, ডাউনিং স্ট্রিটে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়। স্টার্মার জেলেনস্কিকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান এবং ব্রিটেনের সমর্থনের আশ্বাস দেন। বৈঠকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ইউক্রেনের নিরাপত্তা, এবং ব্রিটেনের সমর্থন নিয়ে আলোচনা হয়।
ইউক্রেনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি: নির্বাচন ও গণতন্ত্র
ট্রাম্পের 'স্বৈরশাসক' মন্তব্যের মূল কারণ ছিল ইউক্রেনে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন না হওয়া। ২০২২ সালে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে ইউক্রেনে সামরিক শাসন জারি রয়েছে, যা নির্বাচন আয়োজনকে কঠিন করে তুলেছে। জেলেনস্কি এই পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বজায় রাখতে আন্তর্জাতিক সমর্থন কামনা করছেন।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া: মিত্রদের অবস্থান
ট্রাম্পের মন্তব্যের পর আন্তর্জাতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কিছু পশ্চিমা নেতা জেলেনস্কির সমালোচনা করলেও, অনেকে তাঁর নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেন বিষয়ক বিশেষ দূত কিথ কেলগ জেলেনস্কিকে 'সাহসী নেতা' বলে অভিহিত করেছেন।
উপসংহার
ভলোদিমির জেলেনস্কির সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক সফর এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্ক ইউক্রেনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জটিলতা প্রকাশ করে। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, আন্তর্জাতিক সমর্থন, এবং নেতাদের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।